ডায়বেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা – বর্তমানে ডায়াবেটিস একটি কমন রোগ হিসেবে পরিচিত। ডায়াবেটিস এর কারণে আমাদের শরিরে ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। যার কারণে রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা যার সমাধান করা প্রায় অসম্ভব তবে খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়।
ডায়াবেটিস রোগের একমাত্র চিকিৎসা হলো রক্তে শর্করার পরিমান নিয়ন্ত্রনে রাখা। এমন সব খাবার পরিহার করা যা আমাদের রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি করে দেয়।
প্রিয় পাঠক, আমাদের আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো – ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা সম্পর্কে। সাথে আমরা জানাবো – ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্যতালিকা, ডায়াবেটিস হলে কি কি সবজি খাওয়া যাবে কি না ও অজানা অনেক প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর সম্পর্কে। আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে ও নিয়ন্ত্রন করে রাখতে চান তাহলে আর্টিকেল টি শেষ পর্যন্ত পড়ার চেষ্টা করুন।
ডায়াবেটিস কি
ডায়াবেটিস কি? ডায়াবেটিস যা বহুমুত্র রোগ নামে ও অধিক পরিচিত। রক্তে যখন দীর্ঘ সময় ধরে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায় স্বাভাবিকের তুলনায় তখন শরিরে ইনসুলিন তৈরি হয় না ও ইনসুলিন সঠিক ভাবে কাজ করতে পারে না। এই দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা কে মূলত ডায়াবেটিস রোগ হিসেবে পরিচিত।
ডায়াবেটিস এর ফলে ঘন ঘন প্রসাব হওয়া, খুদা অনেক বেশি পরিমানে লাগা ও নানান ধরণের জটিল সব সমস্যা দেখা যায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে হতে পারে হার্ট এট্যাক এর মতো মারাত্নক সমস্যা।
ডায়বেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
ডায়াবেটিস কখনো সম্পূর্ণ ভাবে শরির থেকে নিরাময় করা এখনো সম্ভব নয়। তবে ডায়াবেটিস এর রোগীর ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে রাখা যায় খাদ্য তালিকা পরিবর্তন এর ফলে। ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার যুক্ত করতে হবে বাদ দিতে হবে অধিক শর্করা যুক্ত খাবার।
আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে নিচের খাদ্য তালিকা গুলো এড়িয়ে চলতে হবে যেগুলো হলো –
চিনি
ডায়াবেটিস থাকলে কোনো ভাবেই চিনি যুক্ত কিছু খাওয়া যাবে না, চিনি দ্রুত রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেয়। চিনিযুক্ত সকল খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। আপনার যদি চা খাওয়ার অভ্যাস থাকে চা এর ক্ষেত্রেও চিনি কম অথবা একদম চিনি ছাড়া চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
মধু
ডায়াবেটিস হলে আপনাকে মধু এড়িয়ে যেতে হবে। মধু ও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রক্তে শর্করা বৃদ্ধি করে দেয়। মধু খাওয়ার প্রয়োজন পরলে আপনাকে অবশ্যই দেখে নিতে হবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রয়েছে কি না।
মিস্টি
মিস্টি তে অধিক পরিমানে চিনি ব্যবহার করা হয়। চিনি ডায়াবেটিস এর জন্য অনেক ক্ষতিকর যা আমরা পূর্বেই মেন্সন করেছি। মিস্টি জাতীয় সকল খাবার পরিহার করতে হবে। যেমন – বিস্কিট, কেক, জিলাপি ইত্যাদি যা রয়েছে।
জেলি
আপনার যদি ডায়াবেটিস এর সমস্যা থাকে তাহলে আপনার জেলি পরিহার করা প্রয়োজন। জেলি যুক্ত কেক গুলো পরিহার করতে হবে। জেলি ব্যবহার করা হয় এমন সব খাবার বাদ দিতে হবে।
আইসক্রিম
আইসক্রিম আমাদের সকলের প্রিয় একটি খাবার তবে ডায়াবেটিস থাকলে এটা কোনোভাবে খাওয়া যাবে না। কারণ আইসক্রিমে দুধ ও চিনির অত্যাধিক ব্যবহার করা হয় যা শর্করা বাড়ানোর জন্য কাজ করে।
মিস্টি দই
ডায়াবেটিস থাকলে মিস্টি দই একদম পরিহার করতে হবে। তবে আপনি চাইলে টক দই খেতে পারেন তবে সেটা খাওয়ার পূর্বে ডায়াবেটিস এর পরিমাপ করে নিতে হবে।
চর্বিযুক্ত মাংশ
চর্বি যুক্ত মাংশ ডায়াবেটিস এর জন্য অনেক বেশি সমস্যার সৃষ্টি করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য পরিহার করতে হবে চর্বিযুক্ত মাংশ গুলো।
ঘি
আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে ঘি বাদ দিতে হবে, ঘি রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি করে দেয়।
আখ বা আখের রস
আখ একটি উচ্চ চিনিযুক্ত ফসল। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আখ বা আখের রস খাওয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে আখের গুড় ও খাওয়া যাবে না।
খেজুর
খেজুর রক্তে শর্করার পরিমান বৃদ্ধি করে দেয়। ডায়াবেটিস থাকলে বাদ দিতে হবে খেজুর কে।
এ ছাড়াও অনেক ধরণের খাবার আপনাকে ত্যাগ করতে হবে যদি আপনি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে চান। যেমন – জ্যম, ডালডা, কলিজা, গলদা চিংড়ি, ভাজা-পোড়া খাদ্য, পাকা কলা, কিশমিশ, আঙুর ফল ইত্যাদি।
খাবার তালিকা থেকে এসকল খাবার বাদ দিলে যে ডায়াবেটিস ভালো হয়ে যাবে ব্যাপার টা এমন মোটেই তা নয়, ডায়াবেটিস শরিরে একবার থাকলে এটা আপনাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করে রাখতে পারেন তাহলে বড় কোনো সমস্যা তৈরি হবে না।
যেহেতু এই রোগের মূল চিকিৎসা হলো এটা কে নিয়ন্ত্রন করে রাখা। এজন্য আপনাকে এ সকল খাবার বাদ দিতে হবে। সাথে বাদ দিতে হবে যে সকল খাবার শরিরে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যে সব খাবার গুলো শর্করা বাড়ায় না সেগুলো খাওয়া ডায়াবেটিস এর রোগীদের জন্য একদম নিরাপদ।
আরো পড়ুন: বড় ভাইকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা স্ট্যাটাস
ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে
ডায়াবেটিস হলে কি কি খাওয়া যাবে না বা ডায়াবেটিস রোগীদের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা আমরা উপরে উল্লেখ্য করেছি। এবার চলুন জেনে নেই কোন ধরণের খাবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাওয়া নিরাপদ।
যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে তবে এই খাদ্য গুলো খেতে পারেন এতে আপনার ডায়াবেটিস এর কোনো সমস্যা তৈরি হবে না – মাছ, ফল, পনির, ডিম, ছানা, চাল, গম, রুটি, চিড়া, নোনতা বিস্কিট, ডাল, বাদাম, নুডলস, চর্বি ছাড়া মাংশ, নানিতোলা দুধ ইত্যাদি খাবার গুলো তে ডায়াবেটিস এর কোনো সমস্যা তৈরি করে না।
ডায়াবেটিস এর লক্ষন
ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব নয়। ডায়াবেটিস যে কোনো ব্যাক্তির ক্ষেত্রে হতে পারে। তবে জ্বীনগত কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুকি থাকে ডায়াবেটিস হওয়ার। যদি আপনার পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আপনার ডায়াবেটিস হওয়ার চান্স 90% এর বেশি তবে হবেই যে এমন কোনো নিয়ম নেই।
সাধারণত ডায়াবেটিস হলে অনেক রোগী নিজেই বুঝতে পারে না যে তার ডায়াবেটিস রয়েছে। তবে বিশেষ ভাবে যে সব লক্ষন থাকলে বুঝবেন যে ডায়াবেটিস হতে পারে সেগুলো হলো –
1 – স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি পরিমানে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
2 – শরিরে ক্লান্তি ভাব থাকা।
3 – শরিরের কোনো অংশে কেটে বা পুড়ে গেলে সেটা শুকাতে অনেক দেরি হওয়া।
4 – প্রদাহ বার বার হওয়া।
5 – দৃষ্টি শক্তি ঝাপসা হয়ে আসা।
6 – কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমতে থাকা।
7 – স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বার বার খুব তৃষ্ণা পাওয়া।
টাইপ 1 ডায়াবেটিস এর লক্ষন গুলো যে কোনো বয়স থেকেই শুরু হতে পারে তবে 40 বছর পার হওয়ার পর এটা টাইপ 2 ডায়াবেটিস আকার ধারণ করে। যদি আপনার এ ধরণের লক্ষন গুলো থাকে তাহলে দ্রূত আপনার ডায়াবেটিস আছে কি না সেটা পরিক্ষা করে দেখে নিতে হবে।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়
ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে অনেক মারাত্নক ধরণে জটিল সমস্যা তৈরি করতে পারে। যদি রক্তে চিনির পরিমান বেড়ে যায় তখন রক্তনালীর সমস্যা তৈরি হওয়া শুরু করে। রক্তনালী তে সমস্যা তৈরি হলে শরিরের সকল স্থানে রক্ত প্রাবাহিত হতে পারে না যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতে পারে স্নায়ু এর।
ডায়াবেটিস নিয়নন্ত্রনে না রাখলে এর ফলে দৃষ্টি শক্তি চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার মতে – ডায়াবেটিস এর কারণে কিডনি বিকল হওয়া, দৃষ্টি শক্তি নস্ট হওয়া, হার্ট এট্যাক, স্ট্রোক ইত্যাদি হতে পারে বা ঝুকি অনেক বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস কত প্রকার ও কি কি
ডায়াবেটিস সাধারণত দুই ধরণের হয়ে থাকে যা হলো –
1 – ডায়াবেটিস 1 টাইপ
2 – ডায়াবেটিস 2 টাইপ
টাইপ 1 ডায়াবেটিস কি
টাইপ 1 ডায়াবেটিস গুলো সাধারণত তরুন বয়স থেকেই এর লক্ষন প্রকাশ পায়। ছোট বেলা থাকে যাদের শরিরে ইনসুলিন এর মাত্রা অনেক কম থাকে তাদের ক্ষেত্রে টাইপ 1 ডায়াবেটিস বেশি দেখা যায়।
প্রাথমিক ভাবে এ ধরণের সমস্যা দেখা গেলে কৃত্তিম ভাবে ইনসুলিন দিয়ে এর মাত্রা বাড়ানো হয়। যেহেতু ডায়াবেটিসে ইনসুলিন নেয়া ছাড়া কোনো ঔষধ নেই। ডায়াবেটিস টাইপ 1 রোগীদের জন্য ইনসুলিন নেয়া অনেক বেশি দরকার।
টাইপ 2 ডায়াবেটিস কি
টাইপ 2 ডায়াবেটিস এর লক্ষন সাধারণত 40 বছর বয়স এর পরে দেখা যায়। শরিরে শর্করা বেরে গেলে ও ইনসুলিন তৈরি করতে ব্যার্থ হলে সে ক্ষেত্রে তাকে টাইপ 2 ডায়াবেটিস বলা হয়। টাইপ 2 ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রে নিয়মিত খাদ্য অভ্যাস এর মাধ্যমে এটা নিয়ন্ত্রন করে রাখা যায়।
সাধারনত আমাদের এশিয়া মহাদেশে টাইপ 2 ডায়াবেটিস এর রোগির সংখ্যা অনেক বেশি।
টাইপ 2 এর চেয়ে টাইপ 1 ডায়াবেটিস মারান্তক প্রভাব ফেলে। যদি আপনার ডায়াবেটিস এর লক্ষন থাকে তাহলে দ্রুত কোনো ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ গ্রহন করতে হবে। প্রয়োজনে আপনাকে ইনসুলিন ও গ্রহন করতে হবে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখার উপায়
ডায়াবেটিস থেকে সুস্থ হওয়ার কোনো মাধ্যম নেই। যদি আপনার একবার ডায়াবেটিস হয় তাহলে এটা সারাজীবন আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে। কিন্তু চিকিৎসার মাধ্যমে ও নিয়মিত খাদ্য অভ্যাস এর মাধ্যমে এটা সহজেই আপনি নিয়নন্ত্রন করতে পারবেন। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন করার জন্য নিচের দেয়া উপায় গুলো অনুযায়ী চলতে পারেন –
1 – পরিমান মতো ঘুমাতে হবে। অতিরিক্ত রাত জাগা যাবে না।
2 – শর্করা জাতীয় খাবার গুলো বাদ দিতে হবে নিয়মিত খাদ্য তালিকা থেকে।
3 – প্রচুর পরিমানে শাকসবজি ও ফল খেতে হবে।
4 – চর্বি বা চর্বি যুক্ত মাংশ খাবার ত্যাগ করতে হবে।
5 – একবারে পেট ভরে না খেয়ে আসতে আসতে খেতে হবে।
6 – মাংশের চেয়ে মাছ খাওয়ার পরিমান বাড়াতে হবে। বিশেষ করে – সামুদ্রিক মাছ ডায়াবেটিস এর জন্য খুবই উপকারি।
7 – ক্যালরি যুক্ত খাবার খেতে হবে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য, সবুজ শাক সবজিতে ক্যালরি বেশি থাকে শর্করার পরিমান কম থাকে।
8 – ডায়াবেটিস এর রোগীদের জন্য প্রতিদিন ব্যায়াম অনেক উপকারি। প্রতিদিন 1 ঘন্টা ব্যায়াম ও হাটাচলা করতে হবে। যত বেশি শুয়ে কাটাবেন ততো বেশি সমস্যা বাড়তে পারে।
9 – রসুন ডায়াবেটিস এর জন্য বেশ উপকারি। রসুন শরিরের কোলস্ট্রেরল এর পরিমান কম রাখে। তাই প্রতিদিন 2-3 কোয়া রসুন খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন।
10 – ডায়াবেটিস এর সমস্যা যদি বেশি থাকে তাহলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার গ্লুকোজ পরিক্ষা করতে হবে। যদি মাত্রা কিছুটা কম থাকে তাহলে প্রতি মাসে করাতে হবে। বছরে 2/1 বার কিডনি ও চোখ পরিক্ষা করতে হবে।
11 – সর্বোপরি একজন রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। ডাক্তার এই আপনাকে সকল নির্দেশনা দিয়ে দিবেন।
ডায়াবেটিস যে কোনো ভাবে হতে পারে এটা প্রতিরোধ করা অসম্ভব। তবে ডায়াবেটিস এর কারণে সমস্যা হওয়ার পূর্বে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ে চিন্তা না করে এটা কে সর্বোপরি নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করুন তাহলে আপনার স্বাভাবিক জীবনে তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে যে সব শাক-সবজি খাবেন
ডায়াবেটিস এর রোগীদের ক্ষেত্রে শাক – সবজি খাওয়া অনেক বেশি উপকারি। তবে সব ধরণের শাক – সবজি খাওয়া ডায়াবেটিস এর রোগীদের জন্য নিরাপদ নয়। যে ধরণের শাক সবজি খাবেন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য সেগুলো হলো –
বাধাকপি, পালংশাক, ফুলকপি, ঝিঙা, পেপে, শসা, খিরা, মাশরুম, ক্যাপসিক্যাম, পটোল, মরিচ, বেগুন, মটরশুটি, কচুর লতি, করলা, ডাটা, সজনে, চালকুমড়া, লাউ, চিচিঙা, কাচা টমেটো, মসুর ডাল, ছোলা, ঢেড়স ইত্যাদি খাওয়া একদম নিরাপদ।
এ ছাড়াও শর্করা যুক্ত খাবার পরিমিত পরিমানে খেতে পারেন শর্করা যুক্ত সবজি হলো – মিস্টি কুমড়া, আলু, পাকা টমেটো, মটরশুটি, কাচা কলা, বেগুন, শালগম, শিমের বিচি, কাকরোল, মোচা , বিট ইত্যাদি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রতিদিন এক ধরণের সবজি না খেয়ে প্রতিদিন আলাদা আলাদা সবজি খাদ্য তালিকায় রাখুন। আমরা আবার অনেকেই বিভিন্ন পেশায় জড়িত। আপনার দৈনিক শ্রম অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমান ক্যালরি যুক্ত খাবার প্রতিদিন খেতে হবে।
ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
যদি আপনার বয়স 40 এর অধিক থাকে তাহলে সুগারের মাত্রা থাকা উচিত 90 থেকে 130 এর মধ্যে। যদি খাওয়ার পরে সেটা 140 এর মধ্যে থাকে তাহলে এটা সমস্যা হতে পারে আর যদি এর বেশি বেড়ে যায় তাহলে বিপদ। যদি খাওয়ার পরে 130 এর বেশি বৃদ্ধি পায় বিলম্ব না করে ডাক্তার এর কাছে চলে যাবেন।
ডায়াবেটিস কি প্রতিরোধ সম্ভব
ডায়বেটিস মূলত হওয়ার পূর্বে প্রতিরোধ করার কোনো উপায় নেই কিন্তু ডায়াবেটিস হওয়ার পরে এটা নিয়ন্ত্রন করে রাখা যায়। নিয়মিত রক্তে সুগার বেড়ে না যায় এমন সব খাদ্য পারে ডায়াবেটিস থেকে রক্ষা করতে। অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিস এর জন্য সমস্যার কারণ আপনি চাইলে আপনার ওজন কমিয়ে রাখতে পারেন।
যদি আপনার ধুমপান করার অভ্যাস থাকে আর যদি ডায়াবেটিস থাকে তাহলে আজ থেকেই ধুমপান বাদ দিতে হবে। প্রতিদিন নিয়ম মেনে ঠিক মতো ঘুমাবেন। অতিরিক্ত চিন্তা করা যবে না সবসময় হাসি খুসি থাকতে হবে। প্রতিদিন কম পক্ষে 1 ঘন্টা সময় হাটুন অথবা সিড়ি বেয়ে উঠা / নামা করুন। শরিরে ক্যালরি বাড়াতে স্বাস্থ্যকর তেল ও বাদাম খাওয়া উপকারি।
ডায়াবেটিস কত থাকলে ইনসুলিন নিতে হয়?
সাধারনত যদি কিডনি ও যকৃতের সমস্যা থাকে তাহলে 130 এর মধ্যে থাকলে ইনসুলিন নেয়া যাতে পারে তবে সেটা নেয়ার পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। যদি ডাক্তার মনে করে দরকার আছে তবেই নেয়া উচিত এ ছাড়া নেয়া উচিত নয়।
কত মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিবৃতি অনুযায়ী বিশ্বে প্রচুর পরিমান ডায়াবেটিসের রোগি আছে। 1890 সালে এর সংখ্যা ছিল 11 কোটির মতো। 2014 সাল নাগাদ সেই সংখ্যাটি বেরে প্রায় 42 কোটি ছিল। তাদের মতে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে অধিক পরিমানে ডায়াবেটিস এর রোগী আছে। যে সব দেশ গুলো খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে সেসব দেশে এর মাত্রা অনেক বেশি।
আমাদের শেষ কথা
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা – আর্টিকেলে আমরা ডায়াবেটিস সম্পর্কে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করুন। আপনার যদি ডায়াবেটিস এর লক্ষন থাকে তাহলে পরিক্ষা ছাড়া ডায়াবেটিস এর মতো খাবার পরিবর্তন করবেন না। যত দ্রুত সম্ভব একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর পরামর্শ নিবেন।
কি কি খাবার আপনার শরিরের জন্য ভালো হবে এটা একজন ডাক্তার সঠিক ভাবে নির্বাচন করে দিতে পারবেন। যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে আর তা নিয়ন্ত্রন করে রাখতে চান তাহলে ডাক্তার এর দেয়া খাদ্য তালিকা ও রুটিন অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করুন। আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। যদি ভালো লাগে মন্তব্য করতে ভুলবেন না।
আরো পড়ুন: Sony a6400 price in Bangladesh
আরো পড়ুন: মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়