এলার্জি ঔষধ এর নাম এবং এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি ঔষধ এর নাম খুঁজতে খুঁজতে হয়রান? এদিকে গা চুলকাতে চুলকাতে অবস্থা খারাপ? কিন্তু, কোনো মতেই এলার্জি দূর করতে পারছেন না? আজকের এই পোস্টে আপনাদের সাথে চোখের এলার্জি ঔষধ এর নাম, মুখের এলার্জি ঔষধ এর নাম, বাচ্চাদের এলার্জি ঔষধ এর নাম এবং এলার্জির ট্যাবলেট এর নাম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়লে, এলার্জি নিয়ে যত সমস্যা আছে, সব সমাধান হয়ে যাবে। তো চলুন, শুরু করা যাক।

এলার্জি ঔষধ এর নাম

এলার্জির ধরণ অনুযায়ী এলার্জি ঔষধ এর বিভিন্ন ধরণ হয়ে থাকে। যেমন, কারো মুখে এলার্জি, কারো চোখে এলার্জি আবার কারো পুরো শরীরে এলার্জি। এলার্জি হলে শরীরের সব জায়গায় চুলকানি শুরু হয়ে যায়। চুলকাতে চুলকাতে মাংস তুলে ফেললেও যেন এ চুলকানি শেষ হবার নয়। আমাদের মাঝে অনেকের শরীরে এই এলার্জি অনেকদিন যাবত রয়েছে। অনেক ঔষধ খেয়েও এলার্জি যেতে চায় না। নিচে আমি কিছু এলার্জি ঔষধের নাম উল্লেখ করে দিয়েছি, এগুলো খেলে আপনার শরীর থেকে এলার্জি চলে যাবে।

  • Alatrol
  • ELC-M
  • ZYRTEC
  • Claritin Reditabs
  • Nasacort
  • Deslor
  • Allegra Allergy
  • Leest Plus
  • Telfast
  • Moxilase- DX
  • Fexo 120
  • Diphenhydramine
  • Cetrizine
  • Loratadine
  • Desloratadine
  • Fexofenadine
  • Antioxidant
  • Vitamin A & Zinc
  • Schwabe Allium sativum MT
  • SBL Asterias rubens Dilution
  • ADEL 73 Mucan Drop
  • Dilosyn
  • Rupadin

উপরে উল্লিখিত সকল ঔষধ আপনার শরীরের এলার্জি কমানোর জন্য খেতে পারেন। তবে, আপনার শরীরের এলার্জির পরিমাণের উপর নির্ভর করে ঔষধ খেতে হবে। এজন্য ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে পারেন। কিংবা, এলার্জি ঔষধের নাম ও পরিমানের উপর নির্ভর করে খেতে পারেন।

এলার্জি কমানোর কিছু খাবার

এলার্জি কমানোর জন্য শুধু এলার্জির ঔষধ খেলেই হবে না। এমন কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো আমাদের শরীরের এলার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি করে দেয়। যেমন : গরুর মাংস, বেগুন ইত্যাদি। এসব খাবার খেলে আমাদের শরীরের এলার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। চুলাকানি বেশি হবে। এজন্য অবশ্যই এই খাবারগুলো পরিহার করে চলতে হবে। এছাড়া, আরও কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো খেলে আমরা এলার্জির পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারি। এমন কিছু খাবার নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

See also  চিয়া সিড এর পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা

Antioxidant

এন্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার জন্য এন্টিঅক্সিডেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এন্টিঅক্সিডেন্ট পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে শরীর থেকে এলার্জি দূর হয়ে যাবে। অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, এন্টিঅক্সিডেন্ট কোথায় পাবো? আমাদের হাতের নাগালেই এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া সম্ভব। আমাদের শরীরে এবং প্রকৃতিতে তৈরি হওয়া এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলোর মাঝে ভিটামিন সি অন্যতম। 

এন্টিঅক্সিডেন্ট এর চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ১০০০ থেকে ২০০০ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে আমাদের শরীরের Antioxidant এর চাহিদা পূর্ণ হয়ে যাবে। ভিটামিন সি এর সবথেকে দারুন উৎস হচ্ছে ,  কাঁচা মরিচ, বাঁধাকপি, আলু, লেবু, বাতাবী লেবু, কমলা লেবু, এবং টমেটো, আঙ্গুর, পেয়ারা, কামরাঙ্গাসহ বিভিন্ন শাক সবজীতে এবং টক ফলমূলে। প্রতিদিন এসব সবজী এবং ফলমূল খেলে শরীর থেকে এলার্জি দূর হয়ে যাবে।

Vitamin A এবং Zinc

লেটুস পাতা, পালংশাক, টমেটো, মটরশুটি, গাজর, কুমড়া, মিষ্টিআলু, ধনিয়া পাতা, পীচ, কলা, পেঁপে, তরমুজ ও ভুট্টা প্রভৃতিতে ভিটামিন রয়েছে ব্যাপক হারে। ভিটামিন এ আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, অনেক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। এলার্জি কমাতে ভিটামিন এ অনেক উপকারী একটি উপাদান। নিয়মিত ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেলে আমাদের শরীরে যদি এলার্জি থাকে, তবে সেটি সেরে যাবে।

Zinc আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। Zinc এলার্জি নিরাময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। আপনি যদি এলার্জির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে নিয়মিত Zinc সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন। ওয়েস্টার মাশরুম হচ্ছে Zinc এর অনেক সমৃদ্ধশালী উপকরণ। এছাড়াও, মিষ্টি কুমড়ার বীজ, শীম বীজ, বাদাম ও সূর্যমুখীর বীজ এসবে প্রচুর পরিমাণে Zinc পাবেন।

ঋষি মাশরুম

ঋষি মাশরুম আমাদের দেহের টক্সিন মুক্ত করে, রক্ত ও দেহ থেকে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। দেহে হিস্টামিন তৈরিতে বাধা দেয়। ফলে, আমাদের দেহে যদি এলার্জি থাকে, তবে সেগুলো প্রশমন হয়ে যায়। এছাড়াও ঋষি মাশরুম অনেক উপকারী ভুমিকা পালন করে। বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে, দেহের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। এলার্জি দূর করতে ঋষি মাশরুম অনেক উপকারী। তাই, এলার্জি ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি ঋষি মাশরুম খেলে আপনার শরীর থেকে এলার্জি দূর হয়ে যাবে।

See also  কোলেস্টেরল কি? - স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য জরুরি তথ্য জেনে নিন

Carotenoid

বিভিন্ন ধরণের রঙ্গিন শাক-সবজীতে Carotenoid পাওয়া যায়। যেমন: গাজর, মিষ্টি কুমড়া, হলুদ, পালংশাক, ডাটা শাক ইত্যাদি। এসব শাক-সবজীতে প্রচুর পরিমাণে Carotenoid এবং অন্যান্য ভিটামিন উপাদান পাওয়া যায়। Carotenoid এ রয়েছে ক্যারোটিন, বিটা ক্যারোটিন, লুটিন, লাইকোপেন, ক্রিপটোজেন্থিন এবং জিজেন্থিন সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এসব উপাদান আমাদের শরীরে এলার্জির জন্য প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে অনেক দ্রুত এবং কার্যকরী ভাবে কাজ করে।

এলার্জি দূরকরণের ঘরোয়া সব উপায়

এলার্জি ঔষধ এর নাম এবং কিছু প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে এতক্ষন যাবত আলোচনা করেছি। উপরে যেসব এলার্জি ঔষধ এর নাম উল্লেখ করে দিয়েছি, এগুলো সেবন করলে আপনার শরীরের এলার্জি দূর হবে। এছাড়া, আরও কিছু উপাদান নিয়ে আলোচনা করেছি। এসব উপাদান আপনি বিভিন্ন ফল-মূল এবং শাক-সবজীতে পাবেন। এগুলো খেলে এলার্জি দূর হয়ে যাবে এবং শরীরের বিভিন্ন উপাদান এর ঘাটতি কমে যাবে। তো চলুন, এখন আরও কিছু এলার্জি দূরীকরণের ঘরোয়া কিছু উপায় নিয়ে আলোচনা করা যাক।

নিমপাতা

নিমপাতা তেঁতো হলেও কিন্তু এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী একটি উপাদান। নিমপাতায় অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এলার্জি দূর করতে চাইলে, আমরা ঘরে বসেই শুধু নিমপাতা দিয়েই এলার্জি নিরাময় করতে পারি। এজন্য ১ কেজির মতো নিমপাতা নিবেন। এরপর এগুলো শুকিয়ে নিবেন। তারপর যেকোনো উপায়ে শুকনো নিমপাতা গুলো গুড়ো করে নিতে হবে। এরপর নিমপাতার গুড়ো গুলো ভালো কোন কৌটায় সংরক্ষন করে রাখুন।

এক চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ নিমপাতার গুঁড়া নিবেন এবং ১ চা চামচ ইসব গুলের ভুষি নিবেন। এরপর সেগুলো ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা যাবত ভিজিয়ে রাখবেন। আধা ঘণ্টা হয়ে গেলে একটি চামচ দিয়ে ভালো করে মিশ্রণটি নাড়ুন। এরপর প্রতিদিন খালি পেটে এইভাবে মিশ্রণ করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ইনশা আল্লাহ আপনার এলার্জির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। কেউ যদি প্রাকৃতিক এলার্জি ঔষধ এর নাম জানতে চায়, তবে আমি অবশ্যই নিমপাতার কথা বলবো। প্রতিনিয়ত নিমপাতার রস এভাবে পান করলে নিশ্চিত এলার্জি নিরাময় হয়ে যাবে।

See also  প্রথম ও দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ এবং পিরিয়ড মিস হবার আগে কিভাবে বুঝবেন আপনি প্রেগনেন্ট?

অ্যালোভেরা

শুনতে একটু অবাক লাগতে পারে, কারণ অ্যালোভেরা আমরা রূপচর্চার কাজে ব্যবহার করি। এটি দিয়ে আবার এলার্জি নিরাময় করা সম্ভব নাকি? এলার্জিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং ঔষধি উপাদান রয়েছে। রূপচর্চা ছাড়াও, আমরা অ্যালোভেরা দিয়ে অনেক ঔষধি গুন পেতে পারি। আপনার যদি এলার্জির চুলকানি উঠে, তবে যে জায়গায় চুলকানি শুরু হয়েছে, সেখানে অ্যালোভেরা জেল মেখে নিবেন। এলার্জি দূর হয়ে যাবে।

চুলকানির ট্যাবলেট এর নাম

এলার্জি মানেই চুলকানি। এলার্জি শরীরে থাকলে শরীরের যেকোনো জায়গায় যেকোনো সময় চুলকানি শুরু হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো এলার্জির ঔষধের নাম নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু, যদি কখনো অতিরিক্ত চুলকানি শুরু হয়, তবে শুধু এলার্জির ওষুধ খেয়ে লাভ নেই। তখন আমাদেরকে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। যদি দ্রুত চুলকানি কমাতে চান, তবে চুলকানির স্থানে পেভিসোন মলম লাগাবেন। এতে করে, অনেক দ্রুত চুলকানি প্রশমিত হয়ে যাবে। পেভিসোন মলম চুলকানির স্থানে লাগানোর পাশাপাশি একটি এলাট্রল ট্যাবলেট কিংবা অন্য কোনো এলার্জির ঔষধ খেতে পারেন। উপরে সবগুলো এলার্জির ঔষধের নাম পেয়ে যাবেন। এতে করে অনেক দ্রুত এলার্জি প্রশমিত হবে।

বিশেষ দ্রষ্টব্য : এলাট্রল কিংবা এলার্জির ঔষধ খেলে কিছুটা ঘুমঘুম ভাব হতে পারে।

আরো পড়ুন: নাকের এলার্জি দূর করার উপায়

Rate this post
Subna Islam
Subna Islam
Articles: 80