গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যেই লক্ষণ প্রকাশ পায়। অনেকেই গর্ভধারণ এর প্রথম মাসেই বুঝতে পারেন। তার প্রাথমিক কিছু লক্ষণ নিম্নরূপ:
১. পিরিয়ড মিস হওয়া
প্রধান যে উপসর্গ টি মহিলারা বেশিরভাগ সময়ই লক্ষ্য করেন সেটি হলো পিরিয়ড মিস হওয়া।অনেকের নানা সমস্যার কারণেও পিরিয়ড মিস থাকতে পারে। তাদের জন্য অন্য লক্ষণ গুলো খেয়াল করা জরুরি। কিন্তু গর্ভাবস্থায় প্রথম মাস থেকেই বেশিরভাগ মহিলাদের পিরিয়ড মিস থাকে এবং ২৮-৩৫ দিনের মধ্যে যদি পিরিয়ড না হয় তাহলে ধারণা করা যায় যে সে মহিলা হয়তো গর্ভধারণ করেছেন।
অনেকে পিরিয়ড মিস হবার এক সপ্তাহের মধ্যে কিট টেস্ট করেও তা কনফার্ম করতে পারেন। তাই এই লক্ষণ টিকে গর্ভধারণ এর অন্যতম প্রধান এবং প্রাথমিক একটি লক্ষণ বলে ধারণা করা হয়।
২. মুড সুইং বা মেজাজের উঠানামা হওয়া
গর্ভাবস্থায় একটি নারীর শরীরে নানা হরমোন নির্গত হয়ে থাকে। এসব হরমোন আমাদের শরীরে থাকা নিউরোট্রান্সমিটারকে প্রভাবিত করে। যার ফলে কখনো কখনো কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ হতে পারে, বিরক্ত লাগতে পারে। আবার পরমুহূর্তেই আবার মন ভালো হয়ে যেতে পারে।
অনেকেই একসময় প্রচন্ডরকম বিষণ্ণতায় ভোগেন। এবং কখনো কখনো আপনার কাছের মানুষ জন কেও আপনার বিরক্ত লাগতে পারে। এতে কারো মন খারাপ করবার কোনো কারণ নেই।মাতৃকালীন এই লক্ষণ গুলো বেশিদিন থাকেনা। তাই পরিবারের সবার উচিত সেই সময়টায় একটা নারীকে তার সর্বোচ্চ সাপোর্ট দেয়া।
৩. কিছু কিছু খাবার বিস্বাদ লাগা
গর্ভধারণ এর অন্যতম একটি লক্ষণ হলো হঠাত করেই কিছু খাবারের প্রতি অনীহা আসা। অনেক সময় খুব পছন্দের খাবারটিও বিস্বাদ লাগা শুরু হয়। খাবার থেকে বিদঘুটে গন্ধ বা তামাটে গন্ধ নাকে লাগতে পারে। চারপাশের গন্ধ ও অন্য দের তুলনায় অনেক কড়া ভাবে প্রকাশ পেতে পারে।গর্ভাবস্থায় এস্ট্রোজেন হরমোন নির্গত হওয়ার ফলে প্বার্শপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এরকম হয়ে থাকে।
৪. পেটে গ্যাস হওয়া
গর্ভাবস্থায় প্রাথমিক অবস্থায় পেটে গ্যাস অনুভব হতে পারে অথবা পেট ফাঁপা লাগতে পারে। একই সময়ে ক্ষুদামন্দা অনুভব হতে পারে।
৫. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
গর্ভাবস্থায় রক্ত প্রবাহের কারণে আপনার মূত্রথলি তাড়াতাড়ি পূর্ণ হয়ে যায় তাই তখন ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। গর্ভাবস্থার প্রথম ২-৩ সপ্তাহে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াটা স্বাভাবিক। পরবর্তীতে এর মাত্রা যদি ক্রমশ বেড়েই যায় তাহলে ডাক্তার এর শরনাপ্নন হয়ে গর্ভকালীন ডায়বেটিস টেস্ট করে নিতে হবে।
৬. ক্লান্তি অনুভব হওয়া
অনেকেরই শুরুর দিকে অল্প কাজেও অনেক ক্লান্তি অনুভব হতে পারে। প্রোজেটেরন হরমোনের এর নির্গত হবার কারণে তখন মর্নিং সিকসেশ, রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব এবং ক্লান্তি ভাব অনুভূত হতে পারে।
৭. অত্যাধিক ক্ষুধা অনুভব হওয়া
এরকম টা সবার ক্ষেত্রে না হলেও অনেকের শুরুর দিকে ক্ষুধা বা বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ক্রেভিং টা থাকে। অনেকের প্রথম ২-৩ মাস বা অনেকের শেষের মাসগুলোতে ও ক্ষুধা বেশি লাগতে পারে।
৮. বমি বমি ভাব হওয়া
গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে মর্নিং সিকনেশ এর জন্য বেশিরভাগ সময় সকাল বেলাতেই বমিভাব বেশি হয়ে থাকে। শুধু যে সকালেই হবে ঠিক তা নয় দিনের অন্য যেকোনো সময়েও এরকম বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
৯. স্তনে ব্যাথা অনুভব হওয়া
হরমোন এর নিঃসরণ এর কারণেই অনেকের গর্ভাবস্থার শুরুতে স্তনে ব্যাথা বা স্পর্শকাতর অনুভব হয়ে থাকে। অনেকের পিরিয়ড আরম্ভ হওয়ার পূর্বেও এরকম টি হতে পারে। তাই পিরিয়ড এর সময়সীমা অতিক্রম পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ডাক্তার কে না জানিয়ে কোনো মেডিসিন নেয়া ও এসময় ঝুঁকিপূর্ন।
১০. অনেক বেশি ঘুম অনুভব হওয়া
প্রোজেটেরন হরমোনের অনেক বেশি নির্গত হওয়ার ফলে নারীরা এসময় অনেক বেশি ক্লান্তি অনুভব করেন। এবং মর্নিং সিকনেস, রাতে ঘুম থেকে উঠে বার বার প্রস্রাব করা এবং কারো কারো মাথা ব্যাথা থাকার দরুন এসময় অনেক বেশি ঘুম অনুভব হওয়া টা স্বাভাবিক।
উপরোক্ত লক্ষণ গুলো নানা কারণেই বা নানা সমস্যার কারণে ও দেখা দিতে পারে। যারা প্রেগন্যান্সির প্ল্যান করছেন তাদের যদি উপরের কয়েকটি লক্ষণ মিলে যায় তবেই ঘরে বসে প্রেগ্ন্যাসির টেস্ট করে নিতে পারেন। আরো বেশি কনফার্ম হওয়ার জন্য ডাক্তার এর শরনাপন্ন হোন।
কিছু প্রশ্নের উত্তর:
প্রথমবার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
যারা প্রথমবার প্রেগন্যান্ট হয় স্বাভাবিক ভাবেই তাদের আগে মা হবার কোনো অভিজ্ঞতা থাকেনা।সেক্ষেত্রে শুরুতেই সবকিছু বুঝতে এবং শরীরের সাথে খাপ খাওয়াতে অনেকেরই সময় লাগে।অনেকের এমন ও হয় তিন মাস কেটে যায় কেউ বুজতে পারেনা সে প্যাগনেন্ট। এরকম টা বেশিরভাগ হয়ে থাকে যাদের অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে।
যদি আপনার ও অনিয়মিত মাসিক হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তার এর শরানাপন্ন হয়ে তার চিকিৎসা নেয়া উচিত। কারো যদি এমতাবস্থায় বাচ্চা নেয়ার প্ল্যানিং থাকে সেক্ষেত্রে তার উপরোক্ত যে লক্ষণ গুলো লিখা হয়েছে সে সম্পর্কে জ্ঞান রাখলে শুরু থেকেই বুঝা সম্ভব যে সে নারী প্রেগন্যান্ট। আরো বেশি কনফার্ম হওয়ার জন্য ঘরে কিট টেস্ট এবং ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ নেয়া উচিত।
দ্বিতীয়বার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
দ্বিতীয়বার গর্ভবতী যারা হচ্ছেন তারা প্রথম থেকেই অনেক কিছু বুজতে পারেন। আগের এক্সপেরিয়ান্স কাজে লাগিয়ে এবং প্রাথমিক লক্ষণ থেকে তারা সহজেই বুঝতে পারেন যে তারা প্র্যাগনেন্ট। কখনো কখনো প্রথম প্র্যাগনেন্সির সাথে দ্বিতীয় প্র্যাগনেন্সির কিছু লক্ষণ এ ব্যতিক্রম হতে পারে।
যেমন অনেকে প্রথম প্র্যাগনেন্সি তে কোনো গন্ধ অনুভব করেন না খাবারে, খাবার ও খেতে পারেন সম্পূর্ণ সময় জুড়ে। কিন্তু দ্বিতীয় প্র্যাগনেন্সি তে এসে হয়তো খাবার ঠিক ভাবে খেতে পারেন না।অনেকেরই প্রথম প্রেগনেন্সি অনেক সহজে কেটে যায় কিন্তু দ্বিতীয় প্রেগনেন্সি তে অনেক কমপ্লিকেশনস ও আসে। অনেকেই শারীরিক এবং মানসিক নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে যায় দ্বিতীয় প্রেগনেন্সি তে।
অপরদিকে অনেকেরই জীবনের প্রথম প্রেগনেন্সি কঠিন হলেও দ্বিতীয় প্রেগনেন্সি সহজ ভাবেই কেটে যায়। আসলে প্রেগনেন্সি জার্নিটা কেমন হবে তা নারীর সেই সময়কার শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার উপরই বেশি নির্ভর করে। এছাড়া সাধারণ লক্ষণ গুলো বেশিরভাগ প্রেগনেন্সিতেই নারীদের মধ্যে দেখা যায় যা আমরা ইতোমধ্যে আমাদের পোস্টে বর্ণনা করেছি।
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ কতদিন পর বোঝা যায়?
সহবাসের কতদিন পর গর্ভবতী হওয়া সম্ভব তা নির্ভর করে সেই নারীর মাসিক চক্রের উপর।অনেকের মাসিক চক্র ২৮-৩২ দিনের হয়। অনেকের হয় ৩২-৩৫ দিনের। মাসিক শেষ হবার পর ওভালুয়েশন শুরু হয় যখন একটি পরিপক্ক ডিম্বাণু নারীর জরায়ু তে বেচে থাকে ২৪ ঘন্টার মতো।এবং পুরুষ এর শুক্রাণু বেচে থাকে ৪-৫ দিন। তাই কেউ গর্ভবতী হওয়ার প্ল্যানিং করলে পিরিয়ড এর ৯ম দিন থেকে ২০ তম দিন পর্যন্ত প্রতি একদিন পর পর সহবাস করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন গাইনি চিকিৎসকরা।
বেশিরভাগ নারীদেরই প্রথম প্রেগনেন্সি তে ৪-৮ সপ্তাহের মধ্যেই প্রেগনেন্সি লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রেগনেন্সির শুরুর দিকের লক্ষণ গুলো কিছু টা আমাদের শরীরের অন্যান্য নানা অসুস্থতার সাথেও মিলে যায়। তাই প্রথম দিকেই কেউ সহজে বুজতে পারেনা। তাই প্রেগনেন্সি প্ল্যানিং করে হোক বা না হোক গর্ভবতী হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ গুলো জেনে রাখা উচিৎ সকল নারীদের।
পিরিয়ড মিস হওয়ার আগে গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ
আপনি যদি গর্ভবতী হোন তাহলে পিরিয়ড মিস হওয়ার আগের মূহুর্তে ও কিছু লক্ষণ দেখে তা বুঝে নিতে পারেন। কারো কারো একাধিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। কারো এক বা দুটি লক্ষণ কয়েকদিন ধরেই প্রকাশ পেতে থাকে। এই লক্ষণ গুলো গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহ থেকেই বুঝা যায়।
১. মাথা ব্যাথাঃ শুরুর দিকে আপনার প্রচন্ড মাথাব্যাথা হতে পারে। যেটি পুরোপুরি স্বাভাবিক। সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থায় এই মাথাব্যথা নাও থাকতে পারে। আর যদি থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তার এর শরানাপন্ন হতে হবে।
২. বমি ভাবঃ কারো কারো সকালে বা কারো কারো সারাদিনই বমিভাব হতে পারে।
৩. স্তনে ব্যাথা অনুভবঃ এই সময় স্তনে কিছুটা ব্যাথা অনুভব, স্তন কিছুটা বড় এবং ভার মনে হতে পারে। যেমনটা অনেকের পিরিয়ড এর সময় ও বোধ হয়ে থাকে।
৪. মেজাজ এর উঠানামাঃ গর্ভাবস্থায় কিছু হরমোন এর নিঃসরণ এর কারণেই মুড সুইং হয়ে থাকে। কখনো মন ভালো কখনো খারাপ এরকম নানা অনুভূতি একই সময়ে কাজ করতে পারে।
৫. গর্ভরুপন রক্তপাতঃ গর্ভধারণ এর শুরুতে ডিম্বাণু নিষিক্ত হবার সময় কিছুটা রক্তপাত হয়ে থাকে। যা পরবর্তীতে ১-২ ফোটার মতো স্রাব এর সাথে মিশ্রিত হয়ে যোনিপথ দিয়ে নির্গত হতে পারে। এটি দেখতে হালকা গোলাপি বা বাদামি বর্ণের ও হয়ে থাকে।
৬. খাবারে অরুচিঃ আপনার অনেক খাবারে তখন গন্ধ অনুভূত হতে পারে। খাবার বিস্বাদ লাগতে পারে। এমনকি নিজের অনেক পছন্দের খাবার খেতেও বিরক্ত বোধ হতে পারে।
৭. ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াঃ ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া গর্ভাবস্থায় প্রাথমিক লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি। এটিও হরমোনের কারণেই হয়ে থাকে।
৮. ক্লান্তি অনুভুত হওয়াঃ হরমোনের পরিবর্তন এর দরুন মর্নিংসিকনেস, বমিভাব ও ঘন ঘন প্রস্রাব হবার কারণে বেশিরভাগ নারীদের শরীরে প্রচন্ডরকম ক্লান্তি অনুভব হয়। এর জন্য অনেক বেশি ঘুম ও হয়।
গর্ভবতী হওয়ার দ্বিতীয় মাসের লক্ষণ
গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় মাস থেকেই শুরু হয় বেশিরভাগ মায়েদের জার্নি। মায়ের শরীরে কিছু সুন্দর পরিবর্তন হতে থাকে। এই সময় কে ফাস্ট ট্রাইমেস্টার বলা হয়। এই সময় যে লক্ষণ গুলো দেখা দেয় তা বেশিরভাগ সময় ই প্রথম তিনমাস জুড়েই থাকে।
গর্ভাবস্থার ২য় মাসের শেষে আপনার ভ্রুণ প্রায় ৩ সে.মি. এর মতো দীর্ঘ হয়। তখন আপনার কোমর কিছুটা বড় হতে পারে। আগে যে জামা গুলো আপনার গায়ে সুন্দর এটে যেতো, আরামদায়ক ছিলো তা কিছুটা টাইট অনুভূত হতে পারে যদিও আপনার জরায়ু তখন বৃদ্ধি পায়না তেমন একটা। এছাড়াও স্তনে ভাড়ি ভাব হওয়া, বমিভাব, ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম অনুভব, মর্নিং সিকনেস ইত্যাদি নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
এছাড়াও ২য় মাসে মায়ের শরীরে আরো কিছু সমস্যার দেখা দিতে পারে যার মেডিসিন বেশিরভাগ ডাক্তারই শুরুতে প্রেসক্রাইব করে দেয়।
২য় মাসের কিছু সমস্যা:
- অত্যাধিক লালা নির্গমন
- কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ হওয়া
- বুক জ্বালা
- বদহজম এবং পেট খারাপ
- ক্ষুধামন্দা
- মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা
- স্তনের রং পরিবর্তন হতে শুরু করা
- মুড সুইং
- ত্বকের টেক্সচার পরিবর্তন হওয়া
আপনার ভিতরে আপনার শিশুর নিয়ম করে বেড়ে উঠার জন্য আপনি নিয়মিত খাবার খাবেন।সবজি, ফলমূল প্রচুর পরিমাণে তরল, পানি ইত্যাদি খাবেন। বাহিরের খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলবেন। এসময় আল্ট্রাসাউন্ড এ আপনার বাচ্চার হার্টবিট শোনা যাবে। এই প্রতিটি সময় আপনি উপভোগ করবেন।
আরো পড়ুনঃ নরমাল ডেলিভারি হওয়ার উপায় এবং করণীয়
গর্ভবতী হওয়ার পর কি মাসিক হয়?
অনেকেরই গর্ভবতী হওয়ার কিছু মাস পর্যন্ত মাসিক এর মতো রক্ত দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তার এর শরানাপন্ন হয়ে বিভিন্ন টেস্ট এর মাধ্যমে এই ব্লিডিং কেনো হচ্ছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। অনেক সময় মিস্কেরেজ হওয়ার আগেও এরকম ব্লিডিং হয়ে থাকে। তাই গর্ভধারণ এর পর রক্তপাত কে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়না। কোনো নারীর প্রেগনেন্সি কনফার্ম হওয়ার পর কখনোই যদি ব্লিডিং দেখা দেয় অবশ্যই ডাক্তার এর শরানাপন্ন হতেই হবে।
কত দিন মাসিক না হলে গর্ভবতী হয়?
কোনো নারীর যদি নিয়মিত পিরিয়ড হয়ে থাকে এবং কোনো কারণ ছাড়াই হঠাত পিরিয়ড মিস হয়ে যায় তাহলে ধারণা করা যায় যে তিনি প্রেগনেন্ট। পিরিয়ড সাইকেল এর ২৮-৩২ দিন বা ৩২-৩৫ দিনেও যদি আপনার পিরিয়ড না হয় তাহলে ঘরে কীট টেস্ট এর মাধ্যমে প্রেগনেন্সি কনফার্ম হওয়া যায়।
পিরিয়ড মিস হওয়ার কতদিন পর টেস্ট করতে হয়?
আপনার পিরিয়ড সাইকেল এর ৩৫ তম দিন পর্যন্ত পিরিয়ড ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে। যদি ৩৫ তম দিনের পর ও পিরিয়ড না হয় সেক্ষেত্রে ধরে নিতে পারেন আপনি প্রেগনেন্ট। এইসময় কীট টেস্ট করে তা জেনে নিতে পারেন। কীট টেস্ট এ নেগেটিভ আসলে ডাক্তার এর শরানাপন্ন হোন।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিভাবে করে?
কোনো নারীর যদি পিরিয়ড মিস হয় তাহলে সে চাইলে কিছুদিন অপেক্ষা করেই কীট টেস্ট করে প্রেগনেন্সি কনফার্ম করতে পারেন।
এখন বাজারে নানান ধরনের প্রেগনেন্সি টেস্ট কীট পাওয়া যায়। প্যাকেটের গায়েই সেসব কীট কিভাবে ব্যবহার করবেন তার পদ্ধতি লিখা থাকে। সেগুলো ভালো ভাবে পড়ে তবেই টেস্ট করতে হবে। নতুবা টেস্ট এর রেজাল্ট ভুল আসতে পারে। এতে করে কখনো কখনো আপনি আনপ্ল্যানেড কনসিভ এর স্বীকার হতে পারেন। বেশিরভাগ টেস্ট ই সকালের প্রথম প্রস্রাব এর সাহায্যে করানো হয়ে থাকে।
প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার ঘরোয়া পদ্ধতি
বহু বছর আগে যখন হোম প্রেগনেন্সি কিট অ্যাভেলেবেল ছিলনা তখন মহিলারা নানা ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রেগনেন্সি কনফার্ম করে থাকতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসব ধ্যান ধারণার কতটুকু যুক্তি আছে তা মেনে নেওয়া অনেকটাই কঠিন। বেশিরভাগ সময়ে মানুষ প্রেগনেন্সি টেস্ট করতে হলে বাসায় কীট কিনে এনেই টেস্ট করে থাকেন এবং এতে যে রেজাল্ট প্রকাশ পায় তা ৯০% এর ওপর সত্যি হয়ে থাকে।
অনেকেই চিনি দিয়ে ঘরে প্রেগনেন্সি টেস্ট করে থাকেন। এর জন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে সকালের প্রথম প্রস্রাব নিয়ে তাতে এক চামচ পরিমান চিনি ঢেলে দিয়ে ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। যদি দেখেন যে চিনি গলে যাচ্ছেনা তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনি গর্ভবতী। গর্ভাবস্থায় HCG হরমোন বৃদ্ধির জন্য চিনি গলে না বলে ধারণা করা হয়।
একই টেস্ট লবণ দিয়ে ও করা হয়। এর জন্য একটি পরিষ্কার পাত্রে সকালের প্রস্রাব এর কিছু পরিমাণ নিয়ে তাতে কয়েক ফোটা লবণ ঢেলে দিন।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। যদি দেখেন প্রস্রাব আর লবণ এর মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হচ্ছে অর্থাৎ বুদবুদ হচ্ছে তাহলে বুজতে হবে আপনি প্রেগনেন্ট।
এগুলো প্রচলিত কিছু ধারণা। এর কতটুকু সত্যতা আছে তা আজ ও প্রমাণিত হয় নি। তাই কীট টেস্ট করে প্রেগনেন্সি কনফার্ম করাই হোম প্রেগনেন্সি কনফার্ম এর সবচেয়ে ভালো এবং বিশ্বস্ত পদ্ধতি।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং একজন বিশেষজ্ঞ গাইনোকোলজিস্ট।
আরো পড়ুনঃ