গর্ভকালীন সময় টা এমন একটি সময় যখন একজন নারীর খাবার, ঘুম, ব্যায়াম প্রতিটি বিষয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি নারীর শারীরিক গড়ন এবং গঠনে অনেক পার্থক্য থাকতে পারে। তাই গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই কিছু বিষয়ে ডাক্তার ডায়েটেশিয়ান এর পরামর্শ নিয়ে কাজ করা উচিত।এর পর ও কিছু বেসিক খাবার তালিকা থাকে যা প্রতিটি মা ই এসব মেইনটেইন করে থাকেন।
এসময় অত্যন্ত উপকারী এবং প্রয়োজনীয় খাবারের মধ্যে একটি হলো ফলমূল খাওয়া। আমরা জানি কলা এমন একটি ফল যা নানা পুষ্টি গুনে সমৃদ্ধ। এবং গর্ভকালীন মা এবং তার শরীরের ভিতরে বাড়তে থাকা ফিটাস এর জন্য এই ফলের গুরুত্ব রয়েছে অনেক।
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার কত রকম উপকারিতা রয়েছে তা বলে শেষ করা যাবেনা। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন বি-৬, এছাড়াও আয়রন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকার কারণে গর্ভাবস্থায় থাকা শিশুর হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে কলা। সেজন্য চিকিৎসকেরাও প্রতিটি গর্ভবতী মহিলাদের কে বেশি বেশি করে কলা খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কলা সেবন করলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা নরমাল থাকে সেজন্য যেসব গর্ভবতী মহিলার রক্ত কম থাকে অর্থাৎ হিমোগ্লোবিন কম থাকে তাদের বেশিরভাগই কলা খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস মহিলাদের মর্নিং সিকনেস দেখা দেয়। এই মর্নিং সিকনেস থেকে বাচতে কলা খেতে পারেন।
গর্ভবতী মহিলাদের বেশিরভাগ সময়ই ব্লাড প্রেসার উঠানামা করতে থাকে। আর এটাকে খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে বেশি উত্তম। আপনি যদি প্রতিদিন কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত কলা খেলে ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কিন্তু আপনার রেগুলার চেকআপ যদি সুগার বাড়তি দেখেন সেক্ষেত্রে কলা দিনে একটি করে খাওয়ার পরামর্শ দেন বেশিরভাগ ডাক্তাররা।
কলা কোলেস্টেরল লেভেল কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় দিনে ১-২ টি কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।
গর্ভবতী মহিলাদের একটি কমন সমস্যা হলো হার্ট বার্ণ বা এসিডিটি। এ অবস্থায় আপনি যদি নিয়মিত কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার এই এসিডিটির সমস্যা দূর হয়ে যাবে অনেকটাই। কারণ কলাতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম পাচন শক্তিকে মজবুত করে।তাই এসিডিটির কষ্ট থেকে পরিত্রাণ পান গর্ভবতী নারীরা।
আপনি যদি নিয়ম করে প্রতিদিন কলা খেতে পারেন তাহলে আপনার বাড়তি দুশ্চিন্তা দূর হতে সাহায্য করবে। সেজন্য দিনের যেকোনো সময় আপনার যখন ইচ্ছা হবে তখন একটি করে কলা খেয়ে নিবেন যদি আপনার অন্য কোনো সমস্যা না থেকে থাকে।
গর্ভাবস্থায় হঠাৎ শরীরে ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব হলে একটি কলা খেয়ে নিতে পারেন।এতে আপনার দুর্বলতা কেটে যাবে। এবং কারণ কলা শরীরে তৎক্ষণাৎ এনার্জি প্রদান করবেন যার ফলে আপনার দুর্বলতা নিমিষেই কেটে যাবে।
কলার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন পাওয়া যায় যা গর্ভে থাকা বাচ্চার বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুনঃ
- ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কি কি
- আনারসের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম
- পেঁপের উপকারিতা ও অপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় ডাবের পানির উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার সঠিক সময়
গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার সঠিক সময় হচ্ছে সকালবেলা। সকালবেলা আপনি একটি করে কলা খেতে পারেন। তবে মনে রাখবেন ভুল করেও কখনো সকালে খালি পেটে কলা খাবেন না। কারণ কলা অ্যালকালিন জাতীয় ফল তাই খালি পেটে কলা খেলে আপনার পাচন সম্পর্কীয় সমস্যা দেখা দিবে। সেজন্য নাস্তা খাওয়ার পরে কলা খেলে বেশি উপকার পাবেন।
প্রতিটি গর্ভবতী মহিলাদের খাওয়ার প্রতি অনেক যত্নশীল হওয়া উচিত। প্রতিদিন খাবার ম্যানু তে সকল সুষম উপাদান মেনেই খাবারের চার্ট বানানো উচিত।আর এই ম্যানু তে সকাল এর নাস্তাতেই কলা যোগ করা উচিত।