খেজুরের উপকারিতা

খেজুর খাওয়া সুন্নত। মুসলিম প্রধান দেশ গুলোতে খেজুরের খুব চাহিদা রয়েছে।সুন্নতের পেছনে রয়েছে অনেক উপকারিতা যা আমরা অনেকেই জানি না।

সারাদিন রোজা রাখার পর শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে তাই ইফতারিতে খেজুর আমাদের সারাদিন এর ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
সকালে খালি পেটে খেজুর আমাদের অনেক উপকার করে থাকে। খেজুরে রয়েছে প্রচুর শক্তি, এমিনো এসিড, শর্করা,ভিটামিন ও মিনারেল। প্রতিদিন রোজায় আমাদের অনেক সময় ধরে খালি পেটে থাকতে হয় যার কারণে আমাদের দেহে প্রচুর গ্লুকোজের ঘাটতির যোগান দিতে সাহায্য করে।

খেজুর একটি মিষ্টি জাতীয় ফল, এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পটাসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে সহ প্রচুর খাদ্য গুণ রয়েছে যা আপনাকে প্রতিদিনের ক্যালরির চাহিদা পূরন করতে সাহায্য করে। আসুন এর খেজুরের উপকারিতা ও খেজুরেরপুষ্টিগুণ গুলো জেনে নেই ।

খেজুরের পুষ্টিগুণ

√প্রোটিন: খেজুরে থাকা প্রোটিন আপিনার পেশী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

√ভিটামিন: খেজুর প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে বিশেষ করে ভিটামিন b1 b2 b3 এবং b5। এছাড়াও ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণের সহজ একটি মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। খেজুর খাওয়ার ফলে দৃষ্টিশক্তি যেমন ভালো থাকে তেমনি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

√আয়রনঃ আয়রন মানবদেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান বিশেষ করে নারীদের দেহে আয়রনের চাহিদা পুরুষদের তুলনায় বেশি। আয়রনের অভাবে রক্তশুন্যতা দেখা দেয়। তাই আয়রনের অভাব পূরণ করতে খেজুরের তুলনা নেই। এটি হৃদপিন্ডের কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। যাদের হৃদপিণ্ড দুর্বল তাদের জন্য খেজুর একটি আদর্শ খাদ্য হতে পারে যা তার রোগ প্রতিরোধে প্রতিশেধক হিসেবে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই কাজ করবে।

√কোলেস্টরেল এবং ফ্যাটঃ খেজুরে কোন বাড়তি চর্বি এবং কোলেষ্টরেল থাকে না বলে আপনি খেজুর খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা থাকে না।

√ক্যালসিয়ামঃ খেজুরের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা মানুষের হাড় গঠনে সহায়তা করে থাকে। খেজুরের ক্যালসিয়াম শিশুদের জন্য খুবই উপকারী যা তাদের মারি গঠনে সহায়তা করে। তাই আপনার শিশুকে খেজুর খেতে উদ্বুদ্ধ করুন।

√ফাইবারঃ খেজুরের প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এবং এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের পেটের ক্যান্সারের ঝুঁকি কম।

খেজুরের উপকারিতা

***ক্যানসার প্রতিরোধ :- খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। এক গবেষণায় দেখা যায়, খেজুর পেটের ক্যানসার প্রতিরোধ করে। আর যারা নিয়মিত খেজুর খান তাদের বেলায় ক্যানসারে ঝুঁকিটাও কম থাকে। খুব সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে খেজুর Abdominal ক্যান্সার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে এবং অবাক করা বিষয় হচ্ছে এটি অনেক সময় ওষুধের চেয়েও ভাল কাজ করে।

***ওজন হ্রাস :- মাত্র কয়েকটা খেজুর কমিয়ে দেয় ক্ষুধার জ্বালা। এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। এই কয়েকটা খেজুরই কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে দেয়।
***কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:– খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ। যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। কখনও কখনও ডায়রিয়ার জন্যেও এটা অনেক উপকারী।

***সংক্রমণ :- যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এছাড়া গলা ব্যথা, বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি, এবং ঠাণ্ডায় খেজুর উপকারী। খেজুর অ্যালকোহল জনিত বিষক্রিয়ায় বেশ উপকারী। ভেজানো খেজুর খেলে বিষক্রিয়ায় দ্রুত কাজ করে।

***রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ:- প্রচুর মিনারেল সঙ্গে আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তশূন্যতা রোধ করে। তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।

***কর্মশক্তি বাড়ায়:- খেজুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদাররা যদি মাত্র ২টি খেজুর খান তবে খুব দ্রুত কেটে যাবে তাদের ক্লান্তি।

***স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায় :-খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ থাকার কারণে এটি মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার গতি বৃদ্ধি রাখে, সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ছাত্র-ছাত্রী যারা নিয়মিত খেজুর খায় তাদের দক্ষতা অন্যদের তুলনায় ভাল থাকে।

**হৃদরোগ প্রতিরোধ :- খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম যা বিভিন্ন ধরণের হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর শরীরের খারাপ ধরণের কোলেস্টেরল কমায় (LDL) এবং ভাল কোলেস্টেরলের (HDL) পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।তাই আমাদের খেজুর খাওয়া উচিত সারাবছর, প্রতিদিন।

আরও পড়ুন:-

খেজুরের ঔষধি গুন

খেজুর বিভিন্ন সংক্রামক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে যকৃতের সংক্রমণ এবং সর্দি, কাশি, জ্বর প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।

এছাড়া বদহজম, উচ্চরক্তচাপ, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি সমস্যায় খেজুর উপকারী।

অপকারিতা বা সতর্কতাঃ-

খেজুরের অসংখ্য উপকারিতা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষত্রে খেজুর গ্রহনে সতর্ক হওয়া উচিত।যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুর গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন এবং যাদের দেহে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি তার খেজুর খাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

Rate this post

10 Comments

  1. This info is so much helpful. To remain fit or healthy, this should be added in our food list. We’all are eagerly waiting for the next…Thanks in advance to the author and admins also..

  2. This info is so much helpful. To remain fit or healthy, this should be added in our food list. We’all are eagerly waiting for the next…Thanks in advance to the author and admins also ❤

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *